AOL Desk: বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল শক্তির মিলিত সমাহার দেবী দুর্গা(Durga Puja 2021)। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী মহাদেবী দুর্গাশক্তির বিকাশ আনুমানিক চতুর্থ থেকে পঞ্চম খ্রিস্টাব্দে। সেইসময় রচিত মার্কন্ডেয় পুরাণ এবং শ্রীশ্রী চন্ডীতে তার উল্লেখ আছে। তবে মহাভারত, বিষ্ণু পুরাণ, হরিবংশ, দেবী পুরাণ, ভাগবত ও বাসনপুরাণ, মহাভারতের বিরাটপর্বে ও ভীষ্মপর্বেও দুর্গাস্তব আছে।
ভীষ্মপর্বে ত্রয়োবিংশ অধ্যায়ে অর্জুন দেবী দুর্গার (Durga Puja) স্তবপাঠ করেন। বিষ্ণু পুরাণের পঞ্চম অংশে দেবকীর গর্ভে দুর্গার জন্মানোর বৃত্তান্ত আছে। শ্রীশ্রী চন্ডীতে বলা হয়েছে তিনি জগত্পালিকা আদ্যাশক্তি ও সনাতনী (Durga Puja 2021 )। পুরাকালে মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়ে দেবতারা শ্রীবিষ্ণু ও মহাদেবের কাছে সাহায্যের জন্য় উপস্থিত হন। প্রবল পরাক্রমশালী মহিষাসুরকে বধ করার জন্য সকল দেবতার তেজ থেকে এক অপূর্ব নারীর সৃষ্টি হয়।
সকল দেবতারা তাঁকে নিজেদের অস্ত্র ও অলংকার দিয়ে সজ্জিত করেন। এই নারীই মহিষাসুরকে যুদ্ধে আবাহন করেন। প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ত্রিশূল দিয়ে গেঁথে মহিষাসুরকে বধ করেন দুর্গা। এছাড়া মধু কৈটভ, শুম্ভ-নিশুম্ভকেও পরাজিত করেন তিনি। শ্রীশ্রী চন্ডীতে বর্ণিত আছে প্রাচীনকালে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য সর্বহারা হয়ে নিজেদের সবকিছু ত্যাগ করে বনে গমন করেন। বনের মধ্যে তারা এক মুনির নিকট যান। মেধা মুনি নামে ওই ঋষি সব শোনার পর তাঁদের বলেন “বিশ্ব সংসারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জগতের পালন কর্তা বিষ্ণুর যে মহামায়া শক্তি তারই প্রভাবে এই রকম হয়।
সেই মহামায়া প্রসন্না এবং বরদা হলে মানবের মুক্তি লাভ হয়। মুনির উপদেশ পেয়ে সুরথ ও সমাধি মাটির প্রতিমা গড়ে ৩ বছর কঠোর তপস্যার পর দেবী তুষ্ট হয়ে তাদের দেখা দেন এবং মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। পরবর্তীতে বসন্তকালকে দুর্গাপূজার উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করে বাসন্তী পূজার প্রচলন করেন। রামায়ণ অনুসারে শারদীয়া দুর্গাপুজো বা অকাল বোধনের সূচনা করেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। তিনি রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করার জন্য লঙ্কা গমন করার আগে অকাল বোধন করে শরত্কালে দুর্গার পুজো করেন।
রামচন্দ্রের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে বর দেন দেবী। দেবীর দশহাতে ত্রিশূল, খড়গ, সুদর্শন চক্র, ধনুবার্ন, শক্তি খেটক, পূর্নচাপ, নাগতালা, অংকুশ ও পরশু এ ধরনের অস্ত্র দেখা যায় বলে তিনি দশ প্রহরণ ধারিত্রী।