প্রতিমার পরনে সোনার শাড়ি। মুখে সোনার মাস্ক। থিমেও আছে অন্যরকম চমক। তৈরি করা হয়েছে বিশেষ থিম সং। যেখানে গলা মিলিয়েছেন কলকাতায় বসবাসকারী আফগানিস্তানের নাগরিকরা। ৪১তম বছরে তাঁদের পুজো শহরের মধ্যে অন্যতম সেরা পুজো হবে বলেই মনে করছেন বাগুইআটির অশ্বিনিনগর বন্ধুমহল ক্লাবের পুজোর আয়োজকরা।
কিন্তু যেটা দেখতে দর্শকরা যাবেন সেটা হল থিম। এবছরের থিমটা কী নিয়ে? উত্তরে ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ স্বরূপ নাগ বলেন, ‘একজন মৃৎশিল্পীর জীবন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর জীবন কীভাবে কেটে যায় সেই বিষয় এবং তিলতিল করে প্রতিমা গড়ার পর সেই প্রতিমা যখন তাঁর ঘর ছেড়ে আরেকজনের ঘরে আনন্দ দিতে যায় সেই বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হবে।’
প্রয়াত প্রখ্যাত মৃৎ শিল্পী অরুণকুমার পালের কথা ভেবেই এই থিম করা হচ্ছে বলে স্বরূপ জানিয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতার একাধিক পুজো মণ্ডপে শোভা পেয়েছে অরুণ পালের তৈরি প্রতিমা। পেয়েছে একাধিক শারদ সম্মান। বাড়ি বেহালায় হলেও তিনি মূর্তি গড়তেন কালিঘাটের পটুয়া পাড়ায়। স্বরূপের কথায়, ‘অরুণ পাল একটা কথা বলতেন সারাবছর ধরে আমাদের তৈরি করা মুর্তি অন্যের মণ্ডপ আলো করে। কিন্তু মূর্তি চলে যাওয়ার পর আমাদের ঘর কিন্তু অন্ধকার হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে হয়েছে লোকে পুজোর সঙ্গে জড়িত সবকিছু নিয়ে ভাবলেও এই শিল্পীদের নিয়ে সেভাবে কিছু ভাবেনা। সেকথা ভেবেই এবারের থিম তৈরি করা হয়েছে। অরুণ পালের একটা মূর্তিও থাকবে।’
একদিকে যেমন থিম এবং প্রতিমার সাজে অভিনবত্ব আনা হয়েছে তেমনি থিম সং এও জোড়া হয়েছে একটি বিশেষ দিক। কলকাতায় বসবাসকারী আফগানিস্তানের নাগরিকরা সুর মিলিয়েছেন নিজেদের ভাষাতেই। ক্লাবের সঙ্গে যৌথভাবে এই কাজে এগিয়ে এসেছে ‘ক্রাউড নেক্সট মিডিয়া আর্ট’ বলে একটি সংস্থা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে যেহেতু গানবাজনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাই প্রতিবাদে বাংলা ভাষার সঙ্গে আফগানিস্তানের পুস্ত ভাষায় একটি গান থিম সং হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। যেটা পুজো মণ্ডপে বাজবে। গানের কথা ও সুর তৈরি করেছেন প্রীতম ডি।