বাংলা-সহ গোটা বিশ্বে যে সকল দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী হলো হাওড়ার বেলুড় মঠের দুর্গাপুজা । স্বামী বিবেকানন্দের হাত ধরে ১৯০১ সাল থেকে মা দুর্গার পুজো শুরু হয় বেলুড়মঠে । তারপর থেকে শতবর্ষ পেরোলেও সেই একই রীতিনীতি ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে চলে আসছে বেলুড় মঠের দুর্গাপুজো ।
স্বামী বিবেকানন্দের হাত ধরেই এই পুজো শুরু হয়। তৎকালীন সময়ে কলকাতার গোঁড়া হিন্দু সমাজ বিবেকানন্দের পশ্চিমী দেশে যাত্রা মেনে নেয়নি। তাছাড়াও কোনও ভেদাভেদ না মেনে সকল সম্প্রদায়ের এবং সকল বর্ণের মানুষের সঙ্গে স্বামীজীর মেলামেশা ভাল চোখে দেখতেন না সেই সময়ের হিন্দুরা। তাই তাঁর ভাবধারার গ্রহণযোগ্যতা অর্জন ও সদ্য প্রতিষ্ঠিত বেলুড় মঠ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দূর করতেই এই দুর্গাপুজোর আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পশ্চিমী দেশে যাত্রার পর নারীদের প্রতি আধুনিক সমাজের মনোভাব মুগ্ধ করেছিল তাঁকে।
তাই বাংলার সমাজে নারীদের প্রতি অবহেলা দূর করতে এবং যথাযথ সম্মানের লক্ষ্য বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর প্রচলন হয়। অষ্টমীর পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হলো কুমারী পুজো। এক কন্যাকে দেবীরূপে গণ্য করে গঙ্গাস্নান করিয়ে শুদ্ধ বস্ত্র পরিয়ে পুজো করা হয়। ১৯০১ সালে দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগেই দুর্গার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। যার পরেই স্বামীজির নির্দেশে পুজোর আয়োজনে তোড়জোড় শুরু করা হয়। তিনি চেয়েছিলেন শুভ সন্ধিক্ষণে পশুবলি দিতে। কিন্তু মা সরদার আদেশে এই রীতি না মেনে ফল বলি দেওয়া হয় বেলুড় মঠে।