মহালয়া, পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। বলতে গেলে, এদিন থেকেই দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায়। ভোরের আলো ফুটতেই মহিষাসুরমর্দিনীর সুর ভেসে ওঠে টিভি রেডিও থেকে। তবে এই মহালয়া দিনটি কি শুভ? একাংশের মতে, মহান কিংবা মহত্বের আলয় থেকেই এই শব্দের উৎপত্তি। সনাতন ধর্মে বলা হয়, এই দিনে পরলোক থেকে মর্ত্যে আত্মাদের যে সমাবেশ হয় তাকেই মহালয়া বলা হয়।
মহালয়ার এই বিশেষ দিনে প্রয়াত আত্মাদের পিণ্ড ও জল প্রদান করা হয় অর্থাৎ পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। তাই অনেকেই মনে করেন এই দিনটি আসলে শোক পালনের দিন। অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন, যেহেতু কাছের মানুষদের ‘তৃপ্তি’ দেওয়া হয় সুতরাং এই দিনটি কোনওভাবেই অশুভ হতে পারে না। পাশাপাশি, মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনার মাধ্যমেই দুর্গাপুজোর আনন্দ, উৎসাহ বাড়তে থাকে।
জানা যায়, কেবল পিতৃপুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তর্পণ মন্ত্রে উল্লেখ আছে, ‘যে বান্ধবা অবান্ধবা বা, যে অন্য জন্মনি বান্ধবাঃ। তে তৃপ্তিং অখিলাং যান্ত, যে চ অস্মৎ তোয়-কাঙ্খিণঃ।’ যার অর্থ, ‘বন্ধু ছিলেন কিংবা বন্ধু নন অথবা জন্মজন্মান্তরে বন্ধু ছিলেন তাঁদের জলের প্রত্যাশা তৃপ্তিলাভ করুক।’ রীতি অনুযায়ী, ‘ মহালয়ার দিনে ঋষি তর্পণ, দিব্য পিতৃ তর্পণ, দেব তর্পণের সঙ্গে থাকে রাম তর্পণ ও লক্ষণ তর্পণ।’
শাস্ত্রমতে এই বিশেষ দিনের কি গুরুত্ব:
পঞ্জিকা মতে, মহালয়ার পর প্রতিপদে যে বোধন হয় সেই সময়েও সংকল্প করে দুর্গাপুজো করা যায়, যাকে বলে প্রতিপদ কল্পরম্ভা। এই তিথিতেই রাবণ বধের আগে দেবীর অকাল বোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। পরবর্তীতে এই পুজো বাসন্তী পুজো নামেই প্রচলিত হয়। এছাড়া, পুরাণ মতে, অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে এমন তিথির গুরুত্ব অবশ্যই অপরিসীম হতে হবে।