সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে অন্তত ৭০ শতাংশ স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের পিন নাম্বার, পাসওয়ার্ড তো জানেনই, এমনকী তাঁরা ফিঙ্গারপ্রিন্টও অদলবদল করেন। মানে স্বামীর মোবাইল বা ট্যাবের সিকিওরিটি হিসেবে থাকে স্ত্রীর আঙুলের ছাপ আর স্ত্রীর মোবাইলে স্বামীর! সমীক্ষায় এও দেখা গেছে এই পাসওয়ার্ড বা পিন জানিয়ে দেওয়া নিয়ে দম্পতিদের তেমন কোনও আপত্তিও অনেক সময় থাকে না।
প্রশ্ন একটাই। স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার এই পাসওয়ার্ড শেয়ার করাটাই কি পারস্পরিক বিশ্বাসের পরাকাষ্ঠা? নাকি আসলে এটা পরস্পরের প্রতি দখলদারিরই একটা রূপ? নিজের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো অপর একজন মানুষের কাছে কতটা খুলে দেওয়া উচিত, তা তিনি আপনার স্বামীই হোন বা প্রেমিক? নাকি পরস্পরের প্রতি আস্থার প্রতীক হিসেবেই সেই ব্যক্তিগত স্পেসটা দেওয়া উচিত? কিছুটা গোপনীয়তা রাখলে কি আসলে সম্পর্কটাকেই সম্মান জানানো হয় না?
নতুন সম্পর্কে পাসওয়ার্ড শেয়ার না করাই ভালো। সদ্য প্রেমে পড়ে থাকলে আবেগে ভেসে গিয়ে নিজের যাবতীয় গোপন তথ্য দিয়ে বসবেন না। কারণ এই সম্পর্ক কতদিন টিকবে আপনি জানেন না, এবং কোনও কারণে সম্পর্ক ভেঙে গেলে আপনার পাসওয়ার্ডগুলোও কিন্তু বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আপনার পার্টনারের সঙ্গে আপনার ঘনিষ্ঠতা যতই গাঢ় হোক না কেন, মনে রাখবেন পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেওয়া মানেই কিন্তু আইডেন্টিটি চুরির জায়গাটাও খুলে দেওয়া! আপনার নাম-পরিচয়-অ্যাকাউন্ট থেকে এমন অনেক কিছু পোস্ট হতে পারে যার সঙ্গে আপনি আদৌ একমত নন। বা আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পিন ব্যবহার করে টাকা তুলে নেওয়া হবে না, সে ব্যাপারেও কি গ্যারান্টি দিতে পারেন?
এমনকী, লং টার্ম সম্পর্কেও পাসওয়ার্ড শেয়ার করা যায় কিনা, তা নির্ভর করে ওই দম্পতির পারস্পরিক রসায়নের উপর। দশ বছর একসঙ্গে থাকলেও সেই কেমিস্ট্রিটা নাও থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড শেয়ারের প্রশ্নই ওঠে না!
অনলাইন প্রাইভেসির ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখুন। আপনি হয়তো নিজের পাসওয়ার্ড দিতে রাজি, কিন্তু আপনার পার্টনার স্বচ্ছন্দ নন। এমনটা হওয়া খুব স্বাভাবিক এবং সে ক্ষেত্রে এই পাসওয়ার্ড না দেওয়াকে ঘিরে আপনাদের মধ্যে যদি ঝগড়াঝাঁটি, মন কষাকষি তৈরি হয়, তা হলে কিন্তু খুব বড়ো সমস্যা তৈরি হতে পারে। পাসওয়ার্ড দেওয়া-নেওয়ার চেয়ে সম্পর্কে সুস্থতা বজায় রাখাটাই কাম্য আর সেই চেষ্টাই করুন।