হিন্দু ধর্মে বিপত্তারিণী ব্রতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বাড়ির সবার মঙ্গল কামনায় হিন্দু বাড়ির মহিলারা এই পুজো নিষ্ঠাভরে করে থাকেন। যেকোনও বিপদ থেকে মুক্তি পেতে, মা বিপত্তারিণীর আরাধনা করার রীতি বহু যুগ ধরে প্রচলিত। সাধারণত আষাঢ় মাসে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এই পুজো হয়ে থাকে। জগন্নাথদেবের রথযাত্রা এবং উল্টোরথের মাঝে যে মঙ্গলবার এবং শনিবার থাকে সাধারণত সেই সময় এই পুজো করা হয়। হিন্দু শাস্ত্র মতে, মা বিপত্তারিণী হল দেবী দুর্গার ১০৮টি অবতারের একটি রুপ। বিশ্বাস করা হয় যে, এই ব্রত পালন করলে সংসার বিপদ মুক্ত থাকে। মা বিপত্তারিণী সকল বিপদ থেকে দূরে রাখেন। এই ব্রতের বিশেষ কিছু নিয়ম থাকে, যা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হয়।
এবছর বিপত্তারিণী ব্রত ১৩ জুলাই বা বাংলার ২৩ আষাঢ়, মঙ্গলবার এবং ১৭ জুলাই অর্থাৎ বাংলার ৩২ আষাঢ়, শনিবার পালন করা হবে।
বিপত্তারিণী ব্রতর বিধি নিষেধ
১) বিপত্তারিণী পুজো চলাকালীন কারুর সঙ্গে কথা বলা উচিত নয়। তাহলে দেবী রাগান্বিত হতে পারেন, অর্থ সম্পর্কিত সমস্যা, ব্যবসায় ক্ষতি ও বাড়িতে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।
২) অপরিষ্কার বা অপরিচ্ছন্ন জায়গায় বিপত্তারিণী পুজো করবেন না, তাহলে বাড়ির সুখ-শান্তি নষ্ট হয়ে যায়।
৩) বিপত্তারিণী ব্রত পালনের জন্য ১৩টি ফল, ১৩টি ফুল, ১৩টি সুপারি এবং ১৩ রকম নৈবেদ্যের প্রয়োজন হয়।
৪) বিপত্তারিণী ব্রতের লাল সুতোয় ১৩টি গিঁট এবং ১৩টি দুর্বা ঘাস বেঁধে দিতে হয়।
৫) পুজো শেষের পর খাদ্য গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও ১৩ রকমের খেতে হবে, যেমন – ১৩টা লুচি, ১৩ রকমের ফল, ইত্যাদি।
৬) যারা ব্রত পালন করবেন, তাদের এই দিন চালের কোনও খাবার (ভাত, চিড়ে, মুড়ি) খাওয়া যাবে না। বিবাহিত মহিলাদের আলতা, সিঁদুর অবশ্যই পরতে হবে।
৭) বাড়ির সকল সদস্যের নিরামিষ আহার গ্রহণ করা উচিত।
৮) পুজোর সময় কাউকে অপমান করবেন না এবং কোনও মহিলার সম্পর্কে খারাপ কথা বলবেন না। এতে দেবী ক্রুদ্ধ হন।
৯) এই দিন পরিবারের নিকট সদস্য ছাড়া, কোনও ব্যক্তিকে টাকা ধার দেবেন না এবং নিজেও নেবেন না। বিশ্বাস করা হয় যে, এই সময় প্রদত্ত অর্থ ফেরত আসে না।