১৫ই এপ্রিল শুরু হচ্ছে ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। বাঙালি এই উৎসবকে চেনে ১লা বৈশাখ বা নববর্ষ নামে। যাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন এইদিন তাঁদের দপ্তরে হয় নূতনখাতা বা হালখাতা পুজো। নূতনখাতা বা হালখাতার মাধ্যমে নতুন বছরের আর্থিক লেনদেনের শুভ সূচনা করা হয়। আর যাঁরা ব্যবসা করেন না, তাঁরা এইদিন ব্যবসায়ীদের দপ্তরে দপ্তরে হালখাতার নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান।
এই হালখাতার পুজোয় সাধারণত লক্ষ্মী এবং গণেশের প্রতিমা বা ছবি স্থাপন করা হয়। সঙ্গে থাকে হিসাবের পুরনো ও নতুন খাতা। প্রথমে গণেশ এবং তারপর লক্ষ্মী ও বিষ্ণুর পুজো করা হয়। পূজান্তে হিসাবের নতুন খাতার প্রথম পৃষ্ঠায় সিঁদুর দ্বারা স্বস্তিক এবং লক্ষ্মীপুত্তলিকা আর শ্বেতচন্দন দ্বারা বিষ্ণুপুত্তলিকা অঙ্কন করা হয়। রুপোর টাকায় সিঁদুর মাখিয়ে সেই টাকার ছাপ দিয়ে তারপর লিখতে হয় “শুভ ১লা বৈশাখ, বঙ্গাব্দ-অমুক, ইষ্টদেবতা (ইষ্টদেবতার নাম লিখতে হবে) প্রসাদাৎ এই কারবার করিতেছি”।
নতুন বছরে নতুন যে খাতায় ব্যবসার হিসেব রাখা হবে, সেই খাতাটি কোনও মন্দিরে নিয়ে গিয়ে পুজো করিয়ে আনার প্রথা আছে। খাতার প্রথম পাতায় সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ব এঁকে দেন পুরোহিতরা। কালীঘাট মন্দিরে এদিন ভিড় উপচে পড়ে ব্যবসায়ীদের। হিন্দুধর্মে স্বস্তিক চিহ্ন বিশেষ মঙ্গল বার্তা বহন করে। তাই যে কোনও পুজো বা শুভ অনুষ্ঠানে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক এঁকে দেওয়া হয়।
তবে আগের থেকে এখনকার দিনে হালখাতার উদযাপন অনেকটাই কমে এসেছে। আগে অনেক দোকানী হালখাতা উপলক্ষ্যে রীতিমত নিমন্ত্রণ পত্র ছাপিয়ে উত্সবের আয়োজন করতেন। এখন বিভিন্ন অ্যাপ ও অনলাইন শপিং-এর কারণে হালখাতার সেই আগেকার দিনের জৌলুস কমে এসেছে।